বিনিয়োগ আনতে সেবা সহজ করার তাগিদ

বিনিয়োগ আনতে সেবা সহজ করার তাগিদ

খ্যাতনামা ব্যবসা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডান অ্যান্ড ব্রাডস্ট্রিট এসএএমই লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজেশ মিরচানদানি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। তিনি এই অগ্রগতিকে আরও জোরদার করতে উদ্যোক্তাদের জন্য সেবা আরও মসৃণ করার তাগিদ দিয়েছেন।

শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিট বা ব্যবসা সম্মেলনের শেষ দিনে গতকাল সোমবার অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে আয়োজিত একটি অধিবেশনে রাজেশ মিরচানদানি এই অভিমত দেন। তিনি বলেন, ‘২৪ বছর আগে প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলাম। এরপর বাংলাদেশে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এ জন্য সব বিনিয়োগকারীকে পূর্ণ নম্বর দেব। গতকাল (রোববার রাতে) বিমান থেকে নেমে জ্যামের কারণে বিমানবন্দর থেকে বের হতে পারিনি। এটা অনেকের কাছে বিরক্তির কারণ। কিন্তু আমি ইতিবাচকভাবে দেখেছি। কারণ, অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। মেট্রোরেল এসেছে, নতুন বিমানবন্দর টার্মিনাল হচ্ছে।’

অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে বলে মনে করেন রাজেশ মিরচানদানি। তিনি বলেন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ব্যবসা করার পথ মসৃণ করতে হবে। সরকারি সেবা আরও সহজ করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশন সঞ্চালনা করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও আনোয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হোসেন খালেদ। এফবিসিসিআই আয়োজিত তিন দিনের এই সম্মেলন গত শনিবার শুরু হয়।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, দেশে ২০৪১ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এখন পর্যন্ত ১০টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৩০টির কাজ চলমান আছে।

আমেরিকান চেম্বার ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘গত ২০ বছরেও বিমানবন্দরে পেশাদার স্ক্যানার বসাতে পারিনি। বিমানবন্দরের গুদামে কোনো ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে। এসব সেবার মান উন্নত করতে না পারলে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবেন না।’

আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চলের এমডি মাইনুউদ্দিন মোনেম বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণে আইনকানুন সহজ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করায় মনোযোগী হতে হবে। এ ছাড়া জমিসংক্রান্ত জটিলতা কমাতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (বেপজা) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডি এনামুল হক।

দিনের আরেক অধিবেশনে নারী উদ্যোক্তারা ব্যাংকঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার তাগিদ দেন। তাঁরা বলেন, স্মার্ট অর্থনীতিতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে তাঁদের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্র ও সুযোগ বাড়াতে হবে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবে নারী উদ্যোক্তাদের বাইরে রাখা হয়েছিল। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে সেই সুযোগ এসেছে।

এই অধিবেশন সঞ্চালনা করেন এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির। বক্তব্য দেন বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের এমডি রুপালি চৌধুরী; সোনিয়া বশির কবির ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির; ওরাকল করপোরেশনের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার রুবাবা দৌলা মতিন; অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার অব বাংলাদেশের সভাপতি মানতাশা আহমেদ; টাইগার নিউ এনার্জির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিকোল মাও প্রমুখ

বাণিজ্য